আল কোরআনের আলোকে অশ্লীলতা হচ্ছে, অন্যের মন্দ কথা প্রকাশ করা, অনর্থক বিষয়ে কথা বলা, এমন অপবাদ ছড়ানো যে বিষয়ে নিজেদের জ্ঞান নেই, চারজন লোকের চাক্ষুষ সাক্ষী ব্যাতিত জেনার অপবাদ দেয়া, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া ইত্যাদি।
ফাহিশাতুন শব্দটির মূল ফাহিশুন যার অর্থ অশ্লীল কাজ। এই অশ্লীলতা নিয়ে পবিত্র কোরআনুল হাকিমে ২৪ টি আয়াত রয়েছে। অশ্লীলতাকে আল্লাহতায়ালা হারাম করেছেন।
আল্লাহ বলেন, হে মুহাম্মদ (স.) বলুন- আমার রব হারাম করেছেন যাবতীয় প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য অশ্লীলতা, পাপ কাজ, অসংগত বিরোধিতা, আল্লাহর সাথে এমন কিছু শরীক করা যার কোন প্রমাণ তিনি নাযিল করেননি এবং আল্লাহর প্রতি এমন কথা আরোপ করা যা তোমরা জান না
এই আয়াতের ব্যাখ্যায় রয়েছে আরো ২৩ টি আয়াত। শয়তান মানুষকে অশ্লীল কাজের প্ররোচনা দেয়- আল্লাহ তা’আলা বলেন, হে মানুষ! পৃথিবীতে যা কিছু হালাল ও পবিত্র বস্তু আছে তা থেকে তোমরা আহার কর আর শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কর না।
সে তো তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। সে তো তোমাদের নির্দেশ দেয় মন্দ ও অশ্লীল কাজ করতে এবং আল্লাহ সম্বন্ধে এমন সব বিষয় বলতে বলে যা তোমরা জান না।
অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, শয়তান তোমাদের অভাব-অনটনের ভয় দেখায় এবং অশ্লীলতার হুকুম দেয়। আর আল্লাহ তোমাদের প্রতিশ্রুতি দেন তার ক্ষমার এবং অনুগ্রহের। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।
ব্যভিচার নিঃসন্দেহে অশ্লীলতা। আল্লাহ বলেন, তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেও না। অবশ্যই এটা অশ্লীল কাজ ও নিকৃষ্ট পন্থা।
অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমাদের নারীদের মধ্যে যারা ব্যভিচার করে তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের মধ্য থেকে চারজন, সাক্ষী উপস্থিত করবে, যদি তারা সাক্ষ্য প্রদান করে তবে ব্যভিচারিণীদেরকে ঘরে আবদ্ধ করে রাখবে যে পর্যন্ত না তাদের মৃত্যু হয় অথবা আল্লাহ্ তাদের জন্য অন্য কোন ব্যবস্থা করেন।
অশ্লীলতা পুনরাবৃত্তি না করা- আল্লাহ তায়ালা বলেন- আর যারা বেঁচে থাকে কবিরা গুনাহ ও অশ্লীল কাজ থেকে এবং ক্রোধাণ্বিত হয়েও ক্ষমা করে দেয়।
অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন- তারা এরূপ যে, কবীরা গুনাহ থেকে এবং অশ্লীল কার্য থেকে বেঁচে থাকে, সগীরা গুনাহ ব্যতিরেকে। নিশ্চয় আপনার রব ব্যাপক ক্ষমাশীল।
তিনি তোমাদের সর্ম্পকে ভাল জানেন-যখন তিনি তোমাদেরকে মাটি থেকে সৃষ্টি করেছিলেন এবং যখন তোমরা ভ্রূণরূপে তোমাদের মাতৃগর্ভে ছিলে।
অতএব, তোমরা নিজেদেরকে পবিত্র মনে কর না। তিনিই ভাল জানেন মোত্তাকী কে।
আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন- এবং যারা কখনও কোন অশ্লীল কাজ করে ফেললে অথবা নিজেদের প্রতি জুলুম করলে আল্লাহকে স্মরণ করে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে নিজেদের অপরাধের জন্য।
আল্লাহ ছাড়া কে আছে যে অপরাধ মার্জনা করেবে? তারা যা করে ফেলে, জেনে-শুনে তার পুনরাবৃত্তি করে না।
লেখক: চেয়ারম্যান, তাসাউফ ফাউন্ডেশন